15
ইয়োবকে ইলীফসের উত্তর 
 1 তখন তেমনের ইলীফস ইয়োবকে উত্তর দিলেন: 
 2 “ইয়োব, যদি তুমি সত্যই জ্ঞানী হতে 
তুমি তোমার অর্থহীন ব্যক্তিগত মতামত দিয়ে উত্তর দিতে না! 
একজন জ্ঞানী ব্যক্তি পূর্বের গরম বাতাসে নিজেকে পূর্ণ করে না| 
 3 তুমি কি মনে কর একজন জ্ঞানী মানুষ অর্থহীন কথা দিয়ে তর্ক করবে 
এবং এমন কথা বলবে যাতে কোন লাভ নেই? 
 4 ইয়োব, যদি তোমার নিজেরই পথ থাকতো 
তাহলে কেউ আর ঈশ্বরকে শ্রদ্ধা করে তাঁর কাছে প্রার্থনা করতো না| 
 5 যে সব বিষয় তুমি বলেছো তাতে তোমার পাপ স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছে| 
ইয়োব, বাক্চাতুরীর সাহায্যে তুমি তোমার পাপকে ঢাকতে চাইছো| 
 6 তুমি যে ভুল করেছো, এ কথা আমার প্রমাণ করার দরকার নেই| 
কেন? নিজের মুখে তুমি যা যা বললে তাই প্রমাণ করে যে তুমি ভুল করেছো| 
তোমার নিজের ওষ্ঠদ্বয় তোমার বিরুদ্ধে কথা বলছে| 
 7 “ইয়োব, তুমি কি মনে কর যে তুমিই প্রথম জন্মেছো? 
তুমি কি এই পাহাড়গুলির জন্মের আগে জন্মেছ? 
 8 তুমি কি ঈশ্বরের গোপন পরিকল্পনা শুনেছিলে? 
তুমি কি নিজেকেই একমাত্র জ্ঞানী ভাবো? 
 9 ইয়োব, তুমি যা জান আমরা ঠিক ততটাই জানি! 
তুমি যতটা বোঝ আমরাও ঠিক ততটাই বুঝি| 
 10 যাদের মাথায় পাকা চুল তারা এবং বয়স্ক লোকে আমাদের সঙ্গে একমত হয়| 
হ্যাঁ, এমন কি তোমার পিতার চেয়েও যারা বয়স্ক তাঁরাও আমাদেরই পক্ষে| 
 11 ঈশ্বর তোমাকে স্বস্তি দিতে চেষ্টা করেন 
এবং আমরা খুব শান্ত ভাবে তোমার সঙ্গে কথা বলি| 
কিন্তু তোমার পক্ষে তা যথেষ্ট নয়| 
 12 ইয়োব, তুমি কেন এত আবেগপ্রবণ? 
কেন তোমার চোখ লাল হয়ে যায়? 
 13 যখন তুমি এই সব ক্রোধের কথা বল 
তখন তুমি ঈশ্বরের বিরুদ্ধে চলে যাও| 
 14 “একজন মানুষ প্রকৃতই শুদ্ধ হতে পারে না| 
একজন মানুষ কখনও ঈশ্বরের চেয়ে বেশী সঠিক হতে পারে না! 
 15 ঈশ্বর তাঁর বার্তাবাহকদেরও* বার্তাবাহক আক্ষরিক অর্থে, “পবিত্র লোকেরা|” বিশ্বাস করেন না| 
এমনকি ঈশ্বরের তুলনায় স্বর্গও শুদ্ধ নয়| 
 16 মানুষও অপদার্থ| 
মানুষ নোংরা এবং নষ্ট| 
সে জলের মতই পাপ গলাধঃকরণ করে| 
 17 “আমার কথা শোন ইয়োব, আমি তোমাকে বুঝিয়ে বলবো| 
আমি যা জানি, তোমায় তা বলবো| 
 18 জ্ঞানী লোকরা আমাকে যা বলেছেন সেই সব কথা আমি তোমায় বলবো| 
জ্ঞানী লোকের পূর্বপুরুষরা এই কথাগুলো তাঁদের বলে গিয়েছিলেন| 
তাঁরা আমার কাছে কোন গোপন কথা লুকিয়ে রাখেননি| 
 19 তাঁরা একাই তাঁদের দেশে বাস করেছেন| 
সেখান থেকে কোন বিদেশীই যায় নি| 
তাই কোন লোকই তাদের কোন অদ্ভুত আদর্শের কথা বলে নি| 
 20 এই সব জ্ঞানী লোক বলেছেন, একজন দুষ্ট লোক সারা জীবন কষ্ট পায়| 
একজন নিষ্ঠুর লোক জীবনের সারা বছর কষ্ট পায়| 
 21 প্রত্যেকটি শব্দ তাকে ভীত করে| 
সে যখন মনে করে যে সে নিরাপদে আছে, তখন শত্রু তাকে আক্রমণ করবে| 
 22 একজন দুষ্ট লোক প্রচণ্ড হতাশাগ্রস্ত এবং অন্ধকারকে এড়াবার তার কোন পথই নেই| 
কোন একটা জায়গায় একটা তরবারী আছে যা তাকে হত্যা করার জন্য অপেক্ষা করছে| 
 23 সে এখানে ওখানে খাবারের খোঁজে ঘুরে বেড়ায়| 
সে জানে যে কঠিন সময় আসন্ন| 
 24 দুঃখ এবং যন্ত্রণা তাকে ভীত করে| 
এগুলো তাকে রাজার মতো আক্রমণ করে যেন তাকে ধ্বংসের জন্য প্রস্তুত| 
 25 কেন? কারণ দুষ্ট লোকরা ঈশ্বরের বাধ্য হতে চায় না- তারা ঈশ্বরকে ঘুষি দেখায়, 
এবং সর্বশক্তিমান ঈশ্বরকে পরাজিত করতে চায়| 
 26 দুষ্ট লোকরা ভীষণ একগুঁয়ে| 
তারা একটা মোটা শক্ত ঢাল নিয়ে ঈশ্বরকে আক্রমণ করে| 
 27 একজন লোক ধনী এবং মোটা হতে পারে, 
 28 কিন্তু সে ধ্বংস হয়ে যাওয়া শহরে, 
যেখানে কেউ থাকে না অথবা যে সমস্ত বাড়ীগুলো ধ্বংস হবার জন্য ঠিক হয়েছে 
সেগুলোতে বাস করবে| 
 29 দুষ্ট লোকরা দীর্ঘদিন ধরে ধনী থাকবে না| 
তাদের সম্পদ স্থায়ী হবে না| 
তাদের ফসল বাড়বে না| 
 30 দুষ্ট লোক অন্ধকারকে এড়াতে পারবে না| 
সে সেই গাছের মতো হবে যার পাতা রোগে শুকিয়ে যায় 
এবং বাতাস তাদের সবাইকে উড়িয়ে নিয়ে যায়| 
 31 দুষ্ট লোকরা অর্থহীন বিষয়ের ওপর কখনো নির্ভর করে না যা তাদের বিপথে নিয়ে যাবে| 
কেন? কারণ তারা কিছুই পাবে না| 
 32 দুষ্ট লোকে তাদের পূর্ণ ব্যাপ্তির জীবনযাপন করতে পারবে না| 
তারা হবে একটি গাছের মত যার ডালপালা শুকিয়ে ঝরে গেছে এবং মরে গেছে| 
 33 দুষ্ট লোকে সেই দ্রাক্ষা গাছের মতো হবে যার দ্রাক্ষা ফল পাবার আগেই শুকিয়ে পড়ে যায়| 
ঐ লোকটি সেই জলপাই গাছের মতো হবে যার মুকুল ঝরে যায়| 
 34 কেন? কারণ এক দল ঈশ্বরবিহীন মানুষ ভাল ফল ফলাতে পারে না| 
যারা ঘুস নেয়, আগুন তাদের বাড়ী ধ্বংস করে দেয়| 
 35 মন্দ লোকরা সমস্যাকে ধারণ করে 
এবং মন্দকে জন্ম দেয়| তাদের গর্ভে জন্ম নেয় মিথ্যা|”