6
জেরুশালেম অবরুদ্ধ 
 1 “ওহে বিন্যামীন গোষ্ঠীর লোকেরা, তোমরা সুরক্ষার জন্য পলায়ন করো! 
তোমরা জেরুশালেম থেকে পালিয়ে যাও! 
তকোয় নগরে তূরী বাজাও! 
বেথ-হক্কেরম থেকে সংকেত দেখাও! 
কারণ বিপর্যয় ও বিধ্বংসের জন্য 
উত্তর দিক থেকে আসছে এক ভয়ংকর ত্রাস। 
 2 কমনীয় ও সুন্দরী সিয়োন-কন্যাকে* 6:2 অর্থাৎ, জেরুশালেমকে। 
আমি ধ্বংস করব। 
 3 মেষপালকেরা তাদের পশুপাল নিয়ে তার বিরুদ্ধে আসবে; 
তারা তার চারপাশে তাদের তাঁবু স্থাপন করবে, 
প্রত্যেকে নিজের নিজের অংশে তাদের পশুপাল চরাবে।” 
 4 “তার বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হও। 
ওঠো, আমরা মধ্যাহ্নেই তাদের আক্রমণ করি। 
কিন্তু হায়, দিনের আলো ম্লান হয়ে আসছে, 
আর সন্ধ্যের ছায়া দীর্ঘতর হচ্ছে। 
 5 তাই ওঠো, চলো আমরা রাত্রিবেলা আক্রমণ করি 
এবং তার দুর্গগুলি ধ্বংস করে দিই!” 
 6 বাহিনীগণের সদাপ্রভু এই কথা বলেন: 
“সব গাছ কেটে ফেলো 
আর জেরুশালেমের বিরুদ্ধে অবরোধ সৃষ্টি করো। 
এই নগরকে অবশ্য শাস্তি দিতে হবে; 
এরা উপদ্রবে পূর্ণ হয়েছে। 
 7 যেভাবে কোনো উৎস বেগে জল নির্গত করে, 
তেমনই সে ক্রমাগত দুষ্টতা বের করে থাকে। 
তার মধ্যে হিংস্রতা ও ধ্বংসের বাক্য প্রতিধ্বনিত হয়, 
তার রোগব্যাধি ও ক্ষতগুলি সবসময়ই আমার সামনে থাকে। 
 8 ওহে জেরুশালেম, সতর্ক হও, 
নইলে আমি তোমার কাছ থেকে ফিরে যাব 
এবং তোমার ভূমিকে উৎসন্ন করব, 
যেন কেউ এর মধ্যে বসবাস করতে না পারে।” 
 9 বাহিনীগণের সদাপ্রভু এই কথা বলেন: 
“যেভাবে আঙুর খুঁটে খুঁটে চয়ন করা হয়, 
ইস্রায়েলের অবশিষ্ট লোকদেরও তারা তেমনই চয়ন করবে; 
আঙুর শাখাগুলিতে তোমরা আবার হাত দাও, 
যেন অবশিষ্ট আঙুরগুলিও তুলে নেওয়া যায়।” 
 10 কার সঙ্গে আমি কথা বলব, কাকে সতর্কবাক্য দেব? 
কে শুনবে আমার কথা? 
তাদের কান বন্ধ† 6:10 হিব্রু: অচ্ছিন্নত্বক হয়েছে 
তাই তারা পায় না শুনতে। 
সদাপ্রভুর বাক্য তাদের কাছে আপত্তিকর; 
তারা তাতে কোনও আনন্দ পায় না। 
 11 কিন্তু আমি সদাপ্রভুর ক্রোধে পূর্ণ, 
আমি আর তা ধরে রাখতে পারছি না। 
“রাস্তায় জড়ো হওয়া ছেলেমেয়েদের উপরে এবং 
একসঙ্গে একত্র হওয়া যুবকদের উপরে তা ঢেলে দাও। 
ঢেলে দাও তা স্বামী-স্ত্রীর উপরে 
এবং তাদের উপরে, যারা বৃদ্ধ ও বয়সের ভারে জর্জরিত। 
 12 তাদের খেতের জমি ও স্ত্রীদের সঙ্গে 
তাদের বসতবাড়িগুলিও আমি অন্যদের হাতে তুলে দেব, 
যখন আমি আমার হাত প্রসারিত করব, 
তাদের বিরুদ্ধে, যারা দেশের মধ্যে করবে বসবাস,” 
সদাপ্রভু এই কথা বলেন। 
 13 “নগণ্যতম জন থেকে মহান ব্যক্তি পর্যন্ত, 
সকলেই লোভ-লালসায় লিপ্ত; 
ভাববাদী ও যাজকেরা সব এক রকম, 
তারা সকলেই প্রতারণার অনুশীলন করে। 
 14 তারা আমার প্রজাদের ক্ষত এভাবে নিরাময় করে, 
যেন তা একটুও ক্ষতিকর নয়। 
যখন কোনো শান্তি নেই, 
তখন ‘শান্তি, শান্তি,’ বলে তারা আশ্বাস দেয়। 
 15 তাদের এই জঘন্য আচরণের জন্য তারা কি লজ্জিত? 
না, তাদের কোনও লজ্জা নেই; 
লজ্জারুণ হতে তারা জানেই না। 
তাই, পতিতদের মধ্যে তারাও পতিত হবে; 
আমি যখন তাদের শাস্তি দেব, তখন তাদেরও ভূপাতিত করব,” 
সদাপ্রভু এই কথা বলেন। 
 16 সদাপ্রভু এই কথা বলেন: 
“তোমরা চৌমাথায় গিয়ে দাঁড়াও ও তাকিয়ে দেখো; 
পুরোনো পথের কথা জিজ্ঞাসা করো, 
জেনে নাও, উৎকৃষ্ট পথ কোন দিকে এবং সেই পথে চলো, 
তাহলে তোমরা নিজের নিজের প্রাণের জন্য বিশ্রাম পাবে। 
কিন্তু তোমরা বললে, ‘আমরা এই পথ মাড়াব না।’ 
 17 আমি তোমাদের উপরে প্রহরী নিযুক্ত করে বললাম, 
‘তোমরা তূরীর ধ্বনি শোনো!’ 
কিন্তু তোমরা বললে, ‘আমরা শুনব না।’ 
 18 সেই কারণে ওহে জাতিবৃন্দের লোকেরা, তোমরা শোনো, 
সাক্ষীরা, তোমরা লক্ষ্য করো 
তাদের প্রতি কী ঘটবে। 
 19 ও পৃথিবী শোনো, 
আমি এই জাতির উপরে বিপর্যয় নামিয়ে আনছি, 
তা হবে তাদের পরিকল্পনার ফল, 
কারণ তারা আমার কথা শোনেনি 
এবং তারা আমার বিধান অগ্রাহ্য করেছে। 
 20 আমার কাছে শিবা দেশ থেকে আনা ধূপ 
বা দূরবর্তী দেশ থেকে আনা মিষ্টি বচ উৎসর্গ করা অর্থহীন। 
আমি তোমাদের হোমবলি সব গ্রাহ্য করব না, 
তোমাদের বলিদানগুলি আমাকে সন্তুষ্ট করে না।” 
 21 সেই কারণে সদাপ্রভু এই কথা বলেন: 
“আমি এই লোকেদের বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধকতা স্থাপন করব। 
বাবারা ও পুত্রেরা একসঙ্গে তাতে হোঁচট খাবে; 
প্রতিবেশী ও বন্ধুবান্ধবেরা ধ্বংস হয়ে যাবে।” 
 22 সদাপ্রভু এই কথা বলেন: 
“দেখো, উত্তরের দেশ থেকে 
এক সৈন্যদল আসছে; 
পৃথিবীর প্রান্তসীমা থেকে 
এক মহাজাতিকে উত্তেজিত করা হয়েছে। 
 23 তাদের হাতে আছে ধনুক ও বর্শা; 
তারা নিষ্ঠুর, মায়ামমতা প্রদর্শন করে না। 
তারা ঘোড়ায় চড়লে 
সমুদ্রগর্জনের মতো শব্দ শোনায়; 
সিয়োন-কন্যা, তোমাকে আক্রমণ করার জন্য 
তারা যুদ্ধের সাজ পরে আসছে।” 
 24 আমরা তাদের বিষয়ে সংবাদ শুনেছি, 
আমাদের হাত যেন অবশ হয়ে ঝুলে পড়ছে। 
প্রসববেদনাগ্রস্ত নারীর মতো 
মনস্তাপে আমরা জর্জরিত হয়েছি। 
 25 তোমরা মাঠে যেয়ো না, 
বা রাস্তায়ও হাঁটাচলা কোরো না, 
কারণ শত্রুর কাছে অস্ত্র আছে, 
আর চতুর্দিকেই আছে আতঙ্কের পরিবেশ। 
 26 আমার প্রজারা, চটের পোশাক পরে নাও 
এবং ছাইয়ের মধ্যে গড়াগড়ি দাও; 
একমাত্র পুত্রবিয়োগের মতো 
শোক ও তিক্ত বিলাপ করো, 
কারণ ধ্বংসকারী হঠাৎই আমাদের উপরে 
এসে পড়বে। 
 27 “আমি তোমাকে ধাতু যাচাইকারীর পরীক্ষক 
এবং আমার প্রজাদের আকরিক করেছি, 
যেন তুমি তাদের পথসকল নিরীক্ষণ 
ও পরীক্ষা করতে পারো। 
 28 তারা হল কঠিন হৃদয় বিশিষ্ট বিদ্রোহী, 
তারা কেবলই নিন্দা করে বেড়ায়। 
তারা পিতল আর লোহার মতো; 
তারা সবাই ভ্রষ্টাচার করে। 
 29 হাপরগুলি ভীষণভাবে বাতাস দিচ্ছে, 
যেন আগুনে সীসা গলে যায়, 
কিন্তু এই পরিশোধন প্রক্রিয়া বিফল হয়, 
দুষ্টদের শোধন হয় না। 
 30 তাদের বাতিল করা রুপো বলা হয়, 
কারণ সদাপ্রভু তাদের বাতিল গণ্য করেছেন।”