8
বন্যার শেষ 
 1 কিন্তু ঈশ্বর নোহর কথা ভুলে যান নি| নোহ এবং নোহের নৌকোয় আশ্রয় পাওয়া সব জীবজন্তুর কথাই ঈশ্বরের মনে ছিল| পৃথিবীর উপর দিয়ে তিনি এক বাতাস বইয়ে দিলেন| এবং সমস্ত জল সরে যেতে শুরু করল| 
 2 আকাশ থেকে অবিশ্রান্ত বর্ষন বন্ধ হল| ভূগর্ভস্ত প্রস্রবণগুলি থেকে জল নির্গত হওয়া বন্ধ হল|  3-4 পৃথিবীর উপর থেকে জলরাশি ক্রমশঃ নেমে যেতে লাগল| 150 দিন পরে জল এতটাই নেমে গেল যে নৌকোটা আবার মাটি স্পর্শ করলো| নৌকা গিয়ে ঠেকল অরারটের একটা পর্বতে| সেটা ছিল সপ্তম মাসের 17 তম দিন|  5 জল ক্রমাগত নেমে যেতে লাগলো এবং দশম মাসের প্রথম দিনে পর্বতের মাথাগুলো জলের উপরে জেগে উঠলো| 
 6 আরও 40 দিন পরে নোহ নিজের তৈরী নৌকোর জানালাটা খুললেন|  7 তারপর তিনি নৌকো থেকে একটা দাঁড়কাক উড়িয়ে দিলেন| এবং যতদিন না জল নেমে গিয়ে শুকনো ডাঙা দেখা দিল ততদিন সেই দাঁড়কাকটা নৌকো থেকে উড়ে গিয়ে এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায় উড়ে বেড়াতে লাগল|  8 নোহ একটা পায়রাও উড়িয়ে দিলেন| পায়রাটা শুকনো ডাঙা খুঁজে পায় কিনা তা নোহ জানতে চাইছিলেন| তিনি জানতে চাইছিলেন যে পৃথিবী এখনও জলে ডুবে আছে কি না| 
 9 পৃথিবী তখনও জলে ঢাকা, তাই পায়রাটা বসার জায়গা না পেয়ে ফিরে এল নৌকোতে| নোহ হাত বাড়িয়ে পায়রাটাকে ধরে নৌকোর ভিতরে টেনে নিলেন| 
 10 সাত দিন পরে নোহ আবার পায়রাটা উড়িয়ে দিলেন|  11 এবং সেদিন বিকেলে পায়রাটা জলপাইয়ের একটা কচি পাতা ঠোঁটে নিয়ে ফিরে এল| পৃথিবীতে যে আবার ডাঙা জেগে উঠতে শুরু করেছে ঐ কচি পাতাটি তারই চিহ্ন|  12 সাত দিন পরে নোহ আবার পায়রাটা উড়িয়ে দিলেন| কিন্তু এবার পায়রাটা আর ফিরে এল না| 
 13 তারপর নোহ নৌকোর দরজাটা খুললেন| নোহ তাকিয়ে শুকনো ডাঙা দেখতে পেলেন| সেটা ছিল বছরের প্রথম মাসের প্রথম দিন| নোহর বয়স তখন 601 বছর|  14 দ্বিতীয় মাসের 27তম দিনের মধ্যে ডাঙা সম্পূর্ণ শুকনো হয়ে গেল| 
 15 ঈশ্বর তখন নোহকে বললেন,  16 “নৌকো থেকে নেমে এস| তুমি, তোমার স্ত্রী, তোমার পুত্ররা আর তাদের বধূরা নৌকো থেকে এবার বাইরে যাও|  17 তোমাদের সঙ্গে নৌকোর সমস্ত পশুপাখী নিয়ে বাইরে যাও| সমস্ত পাখী, সমস্ত জন্তু জানোয়ার এবং বুকে হেঁটে চলে এরকম সমস্ত প্রাণী নিয়ে বাইরে এসো| ঐসব পশুপাখী আরও অনেক পশুপাখীর জন্ম দেবে আর সে সবে আবার পৃথিবী ভরে যাবে|” 
 18 অতএব নোহ, তাঁর স্ত্রী, পুত্র ও পুত্রবধূদের নিয়ে নৌকো থেকে মাটিতে নামলেন|  19 সমস্ত জন্তু জানোয়ার, সমস্ত প্রাণী যা বুকে হাঁটে এবং সমস্ত পাখী নৌকো ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে এল| নৌকো ছেড়ে এল জোড়ায় জোড়ায় সমস্ত পশুপাখী| 
 20 তখন নোহ প্রভুর জন্যে একটা বেদী তৈরী করলেন| নোহ কয়েকটি শুচি পশু ও কয়েকটি শুচি পাখী ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে নিবেদন করে সেই বেদীতে হোম করলেন| 
 21 প্রভু হোমের গন্ধ আঘ্রাণ করে প্রীত হলেন| আপন মনে প্রভু বললেন, “মানুষকে শাস্তি দেওয়ার জন্যে আমি আর কখনও মৃত্তিকাকে অভিশাপ দেব না| কারণ বাল্যকাল থেকে মানুষের স্বভাব মন্দ| সুতরাং এইমাত্র আমি যেমনটি করেছিলাম আর কখনও সেভাবে পৃথিবীর সমস্ত প্রাণীদের ধ্বংস করব না|  22 যতদিন পৃথিবী থাকবে ততদিন শস্যের চারা রোপণের আর ফসল কাটার নির্দিষ্ট সময় থাকবে| ততদিন ঠাণ্ডা, গরম, শীতকাল আর গ্রীষ্মকাল এবং দিন, রাত হয়ে চলবে|”